Web ডুয়ার্স ১৩ - শমীক জয় সেনগুপ্ত - ১৫টি কবিতা
জন্মদিন: ৯ই অক্টোবর ১৯৮৬ (বাংলা ২২শে আশ্বিন ১৩৯৩)। বাবা : শ্রীযুক্ত অভিজিৎ সেনগুপ্ত। মা : স্বর্গীয়া কেতকী সেনগুপ্ত। শিক্ষা: ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। লেখালিখি শুরু ১৯৯৪ সাল থেকে কচিকাঁচা সবুজ সাথী পত্রিকার শিশু বিভাগে। ৯০এর দশকের কনিষ্ঠতম কবিদের মধ্যে একজন হলেও নিজেকে লিটিল ম্যাগাজিন কর্মী বলতেই বেশী স্বাচ্ছন্দ্ বোধ করেন। বারো বছরের মত সময়কাল ধরে শমীক জয় সেনগুপ্তর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়ে আসছে সপ্তপর্ণ পত্রিকা। সপ্তপর্ণ পত্রিকা ও অভিজয় প্রকাশনীর প্রাণপুরুষ শমীককে বাংলা সাহিত্যে আরো একটি বিশেষ কারণে মনে রাখার কারণ হচ্ছে সারা বাংলা জুড়ে জেলা ভিত্তিক ভাবে লিটিল ম্যাগাজিন সম্মান ও সাহিত্যের বিশেষ কিছু শাখার জন্য অভিজয় সাহিত্য সম্মানের জন্য। লিটিল ম্যাগাজিন এর সাথে সাথেই কলকাতা ক্যুইয়ার মুভমেন্ট ও অ্যান্টি ৩৭৭ আন্দোলনে শমীক জয় সেনগুপ্ত অতি পরিচিত ও জনপ্রিয় মুখ।
বই: নদীর কাছে ওরা ক'জন (২০১৬)
পকেট ফুল অফ জয় (২০১৭)
পুরাবর্ত্ম (২০১৭)
পুরস্কার ও সম্মান:
কচিকাঁচা সবুজ সাথী শিশু সাহিত্য সম্মান(১৯৯৬), সরলাবালা বিশ্বাস স্মৃতি সম্মান (১৯৯৯) ও চুণী কোটাল সম্মান (২০১৭)
চাঁদের সংসার
দেওয়াল জুড়ে ফ্রেম তুলেছো
গায়ের ওপর গা
বড়শী দিয়ে চাঁদ গাঁথলে
চাঁদের মাথায় ঘা
ও চাঁদ তোর রুগ্ন শরীর
জ্বর উঠেছে মনে
দু এক মুঠো সকড়ি এঁটো
আকাশ মেঘের কোণে
মেঘের কোণে পুড়ছে একা
চাঁদেলা চুম্বন
দেওয়াল ভরা তারার ফ্রেমে
ওষ্ঠ আচমন
মন কেমনে জড়িয়ে ধরা
ঘা টনটন মাথায়
ব্যর্থ কলম চালায় সে তার
দৃশ্য বিহীন খাতায়
সে সব হাবিজাবির খাতায়
কার কি বা দরকার
পা এগিয়ে করলো প্রবেশ-
চাঁদের সংসার।
ধার্মিক
কর্মে যাকে স্পর্শ করতে পারিনা
তার জন্য সাজিয়ে রাখা অক্ষর
তার নাঙ্গা থালা জুড়ে
প্রতিশ্রুতির সব সম্মোহন বুলি
তার রিক্ত দেহ ঢাকি নির্লজ্জ নির্লিপ্ততায়
হিতাহিত জ্ঞানশূন্য আমার স্বদেশ
স্বপ্ন ভাতায় যার তিয়াত্তরটি রাত কেটে গেছে
তিয়াত্তরটি গতানুগতিক দিনের মতই
তাকে আজো কলের লাইনে দেখি
দেখি সব স্টেশনে স্টপেজে
ঘরে ও বাহিরে
দেখি আর ভাবি
যাকে কেউ ধারণ করে না
তাকেই ধর্ম জুজু খেয়ে যায় মাগনা কোটায়
আমরা ছাগুয়া সব যূপকাষ্ঠে শির
শেষ কচিঘাস দেখে ঠ্যাং তুলি প্রপিতার তৃতীয় সন্তান
ভেজা দুপুরের ন্যাকা কথারা
রোজ দুবেলা ঠিকে ঝিদের মত এসে চৌকাঠ ভিজিয়ে যাস
রোজ দুবেলায় এত তর্জন গর্জন
যেন আমি সম্বৎসর কাজের পর তোর পাওনা শাড়িতে
শব্দের জড়ি চুমকি বসাইনি বা
আর চোখে ত্যাছরা চাহনি দিয়ে মেঘে পাওয়া ঝিমানো দুপুরে
বলে যাস, আর শ্রাবণে অনেক ঝরেছি গো দাদাবাবু
এইবার তাই এট্টু ম্যানেজ দেবেন খনে-
আলুথালু ইশারায় তোকে ডেকে গেছে মাতাল প্রেমিক সিগনাল
ভিজিয়ে দিয়ে গেছিস আধখোয়া ভরা মাঠের নড়বড়ে খুঁটি
ভাগ্যক্রমে দেবী প্রসন্ন হলে
দু এক শব্দ বই আর কি দিতে পারি বৃষ্টি!
তা বলে কি তুই আমায় এত অবহেলা করতে পারিস, বল?
ভয
কিছুক্ষণ আগে জানতে পারলাম
মারা যাবো।
না, না রোগে নয়... অনাহারে, অতিনিদ্রায়।
বন্ধু কবিরা তো বহুকাল হয় বিস্মৃত হয়েছে
যোগাযোগ ছিন্ন করেছে সম্পাদক, পাবলিশার্স, মাঁচা।
তবু বেহায়া ফুসফুস কবিতা বাহিত করে প্রাণবায়ু ভেবে
আর বোবা কলম টুকে যায়, একা
নীরবে।
কর্ম কে "কারমা" বলা ফেক অ্যাকসেন্ট
সামনে দাঁড়িয়ে, হাতে ট্যাটু ; শ্বাদন্তী নেকড়ের দাঁত
গলায় নৃমুণ্ডমালা, জেনে যায় দেহে তাপ বেড়েছে কতটা?
অথবা ভিজে ওঠা পাশবালিশেতে কতটা মানচিত্র আর
জয় করা বাকি।
পাশে শোয়া বই থেকে বাড়ুজ্জেমশাই জানতে চেয়ে থেমে যায়
কুসুম তো ঝরে গেছে অকালবৈশাখে
ওদের মনের খোঁজ না করাই ভালো।
কিছুক্ষণ আগে পর্যন্ত ভেবেছি বেঁচে যাব
তারপর
মরে যাওয়া নিশ্চিত জেনে অভ্যন্তর থেকে মেনিমুখো বাঘটাকে ডাকি।
বাইরে আসার আগে ভয় নামক রিং মাস্টার তাকে চাবুক দেখালে
অনিশ্চিত "মিঁয়াও" বলে ঘুমাতে যায় মন-শার্দূল।
মরে তো গেছিই কবে,
এখন প্রতীক্ষা শুরু আয়ুটার গতি থামবার।
রাস্তা
যোগাযোগে ছেদ পড়ল, রুদ্ধ হল মরমিয়া গান।
দুচোখে পাণির ঢল, করেনি তো মুশকিল আসান
তারপর ফাঁকে ও ফোকড়ে
আপত্তি ও ওজরে
অভিমান ডালপালা করেছে বিস্তার ।
কতদিন কথা হয় না আর।
দেখা, সেও শেষবার চিতার আগুনে
মিলিয়ে দুটোকে দেখি রিপালশন জন্মকথা লেখে
অচেনা সম্ভ্রম আসে হাত দুটো সংকোচে ঢেকে
সুরহীন হয়ে সুর বাঁক নিলে অভিমান বোঝে
ব্যাথারা এখনো একা দূরগামী আশ্রয় খোঁজে।
আশ্বিন শিশির তাই কৃতিকার ছাইমাখা হিমেল হাওয়ায়
যোগাযোগ ক্ষয় হওয়া ভাঙা গান লিখে রেখে যায়
রাস্তাটা একই তবু
চরণ বদলায়।
রোদচশমা ও আমি
রোদচশমার কাছে আমি কৃতজ্ঞ, সে আমাকে অনেক অনুভূতি
চেপে যেতে সাহায্য করেছে।
অন্ধকার ভেবে ভেবে যে চোখ পিয়াসী শুধু বলেছিল
"ঐ শান্ত কালো দৃষ্টিতে আমি ডুবে যেতে পারি"
তাকে ভুলেও দেখাইনি ও চোখে তখন মায়ের চিতার আগুনে
না পোড়া নাভিকুণ্ডের আঁচ...
এটাই আমার ধাঁচ, বুঝে নিয়ে কালো কাঁচ
চশমা আমার .. ডুবিয়েছে প্রেমিককে ছায়ার অতলে।
আর অকস্মাৎ ঝড় নেমে আসা সখ্যতাতে
যতবার ভীড় এসে ভীড় করে... বলে, "দেখি একবার",
গগলস বুঝিয়ে দেয় ... এই তো আছি বেশ মিশে...
শূন্য দৃষ্টিপথ বৃষ্টির খোঁজে মৌসীনগ্রাম হয়ে আরও কিছু দূরে চলে যায়।
পরগাছা
ক্রমশ আলোর থেকে সরে যাচ্ছে সভ্যতা
ক্রমশ অন্ধকার চোখ হয়েছে যে
আমাকে পিছমোড়া করে চাবকে পাছায়
যে বাহিনী হেঁকে ডেকে করে আস্ফালন
তাদের ঈশ্বর আছে, পুরুষোত্তম-
আমরা দেবতাহীন এ নরকপুরে ।
আমাদের আকণ্ঠ হলাহলে স্থিত
আমাদের ভূজপাশে থমকে সময়
জনরোষ জেগে ওঠা অনভিপ্রেত
জনগণ অধিপতি মনে পোষে ভয়
এখানে মূর্তি আছে, কোথায় দেবতা ?
পুড়িয়েছ হুতাশন যা দেবো আহুতি
বিশ্বাস জ্বলে যায় সন্দেহ আঁচে
হাতটুকু ধরি তার স্পর্শ বাঁচিয়ে
সে হাত গলায় ওঠে, শ্বাসরোধ করে
কুণ্ঠিত হয়ে তাই নিজের স্বদেশে
ভয়ে ভয়ে আছি এক পরগাছা হয়ে।
মৃত্যু
তোমার জন্য অপেক্ষা আমার চিতাকাঠ
অগ্নি, তোমার জন্য শরীর মেলেছি একা
এরপরে শুধু ফুলসেজ বাকি ছিল
অগরূর রেখা যাত্রার দিক দেখালে
আমাকেই আজ অভিসারী হতে হবে
স্মার্তর মনে আবছায়া থেকে গেলে
বুঝে নেবো কিছু সুফল জুটেছে কপালে
কপাল জোড়া চ্যাটচ্যাটে চন্দন
সরে গলে পড়ে আগুনের ফুলকিতে
আমাদের দেখা হবে না কি প্রিয়তম
পাটকাঠি জ্বলে, ধোঁয়ারা শূন্যে ভাসে।
তোমার জন্য অপেক্ষা করে একা
পুড়েছে শরীর ... মনের দহন শেষ
অপেক্ষা সাড়া হয়ে গেছে দেখো ভোর
ছাই-এর তলায় অক্ষর ডুবে গেছে।
নির্বান্ধব
মথুরাপুরীতে আজ পড়ে গেছে মহাধূমধাম
কোথায় অরণ্যচারী নিলাজ পুরুষ
তোকেই খুঁটিতে বেঁধে করে চলে স্তব গুণগান,
অতিদর্পী এক নগর সভ্যতা
আমাদের তেঁতে ওঠা মজা যমুনার কুলে
পানি ছলকায় আর ইন্তেজার
বড় বিশ্রী ব্যাপার
তাই সব স্নেহ প্রেমে নবনীতা বঁধু
চালচুলোহীন সব কর্দমাক্ত ছাপোষ চেহারা
একাদশী চাঁদটাকে দেখিয়ে ভ্রূকুটি পা বাড়ায়
ভাবে মনে, পা রাখার জায়গাটা প্রশান্তিদায়ী
সেবা আর প্রেম নিয়ে তুই আজ "আমাদের লোক"
মথুরাপুর হোক, অথবা সে গোঠ
অরণ্যচারী তুই কুমার বালক বড় বেশী কাছাকাছি তাই
আমরা গোপাল সব একাত্মে মিলেমিশে যাই
কিন্তু এসে যে দেখি, এ কি!
স্তবগানে জেগে ওঠা দেবতার ভীড়ে
বন্ধু হারিয়ে যায় সীমাবদ্ধ নিষেধের বুকে
প্রতিটি দেওয়া কথায় রক্ষার দায় থাকে না যে ।
ব্যাভিচারি
কোন বীজ কোনদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা
মনে না থাকায়, কিছু গাছ জন্ম দিল সভ্যতা
এখন আমাদের বাকলে আর পাতায় অপর্যাপ্ত পরিমাণ
পরাগ আর কেশরী স্পর্শ
কোনটার রঙ গাঢ় লাল
কেউ কেউ ফিকে হয় সালোক-সংশ্লেষে..
জারিত জীবন থাকে অধঃক্ষেপ সম্পর্কের মত।
তুমি যদি ব্যাভিচারে বিশ্বাসী হও
তবে তুমি ছুঁয়ো না এ নবজাত সভ্য সমাজ
গাছেরা ছড়াতে জানে .... ব্যাভিচার শেখেনি এখনো।
ডুবসাঁতার
জ্বলন্ত ঠোঁট তোমায় দেবো না ডুবসাঁতার
খাদ বেয়ে তার চুঁইয়ে নামছে অন্ধকার
চুমুই এঁকেছে নাভিকুণ্ডের উষ্ণতায়
হয়তো ভেবেই ভুল সুরে তার কণ্ঠ গায়
তারপরও কি তাক করবে না বিশাখবাণ
রৌদ্রধারায় কেন আজ এই শ্রাবণ স্নান
অংশ যখন পূর্ণতা চেয়ে করেছে জোট
প্রতিটি চুমুই খুঁজে নিক তার নিজের ঠোঁট
তোমাকে ভেবেই জ্বলে ওঠা ঠোঁটে ডুবসাঁতার
নিখাদভাবেই সাজাতে চেয়েছে এ সংসার।
রেশ
১
ভেঙে পড়া উর্বশী কার্নিশে
চুঁইয়ে গড়িয়ে নামছে জল।
রাস্তার মোড়ে কিছু দুরন্ত প্রজাপতির চোখ
ভিজতে ভিজতে জরিপ করছে গঙ্গাফড়িং
আর সুদরশন পতঙ্গ সিম্ফনি,
হক ও হকিকতের হাওয়ায় লাগছে মাঘ শেষের ইঙ্গিত।
২
অঞ্জলির আগে কুল খাওয়ার পাপগুলো বকুলের
নাভিকুণ্ডে মধুর সন্ধান করে
আর মধুপর্কের বাটি ছলকে প্রেম লাগছে
হলদেটে শাড়িতে, লাল পাঞ্জাবির হাতায়
উস্কোখুস্কো চুলে বৈকালিক অনভ্যাসের খড়কুটোয়।
৩
কারুমন্ত্র উচ্চারণে মন সায় দেয়না বহুকাল
শান্ত হতে গিয়ে ভাষারও অপুষ্টিগত দোষ দেখা যায়
আমাদের ভাষা আর অক্ষরবীজে
চোখ রাখে তৃতীয় পাণ্ডব
তবুও লক্ষ্যভেদ, তবু তার ভ্রষ্ট শরপথ
আমাদের ভাষাতেই ভেসে আসে ইঁদুর-দৌড়
পাল্লাপাল্লি ও অপশব্দ লিপি
মহাভাগে সরস্বতী অবলুপ্ত রেখা হয়ে ছোটে
প্রবেশাধিকার
প্রতিক্রিয়াহীন হতে হতে আমি নামটাও ক্রমশ জটসর্বস্ব হয়ে উঠি
নীরবের মুখে এসে শব্দের হরতাল
খিদে মরে গেছে, তাই পাতায় পাতায় সব সংশ্লেষ বিপরীতগামী
নীব থেকে টুপটাপ শিশির ঝরেনি
রঙ সব রংরুটে লংড্রাইভিং-এ
ক্যানভাস ফুটো করে গতানুগতিক হতে শেখে
এখানে উষ্ণ শুধু শুভেচ্ছা আর
বিস্বাদ তেতো লাগে চুমু।
হাহুতাশ যারা করে, আর যারা গুম খেয়ে চুপ মেরে যায়
সবাইকে আয়নায় মনে হয় নিজে-
হাত ছোঁয়, ভিজে ওঠে হাত
প্যান্টের মানচিত্র ধরে রাখে ধীরে
মৃৎচেতা শবরের বীর্য অজুহাত পরম সহিষ্ণু ঝোপের কিনারে
ঝোপ একা জানে
ঋতুমতী শবরীমালায়
দালাল ঢুকতে পারে, বীর্যবান ধর্মের
রাজচিহ্নবাহী
গুটিকয় উন্মত্ত উলঙ্গ পা
পাপ চাপা দেবে ভেবে ভাসিয়েছে গা
তারাও আসতে পারে
তারাও আসুক
কেবল শবরীমালা শবরের হোক
রক্তাক্ত যোনি শুধু হবে বীতশোক
আর উপহার দেবে কিছু মনুর ছাওয়াল
বাওয়ালে বাওয়ালে যারা অমানুষ বেশী
তাদের ধর্ম বলে
শাশ্বত ক্ষমতার বেশে
প্রতিটি ঋতুই গেছে শোকাচারে ভেসে
মন্দির ছেড়ে তাই
চলে যান ভগবতী, ভগসম্ভবা।
ট্রেসপাসার
এইখানে, ওই বাঁক ঘুরে যারা আসছে
তারা জানে না সেতুটা আসলে আরো একটু লম্বা
অনেকটা শেষ হয়ে যাওয়া সম্পর্কের রেশ টানা বিকেলের মত
নীচে নির্লজ্জের মত শিস দিতে দিতে পারি দিচ্ছে ট্রেন
আপ ডাউন বজবক লোকাল।
দুপাশে আলগোছে হোর্ডিং
আমরা পুজো এসে গেছে বলে ভাল থাকার অভিনয় শুরু করে দেই
কে যেন বলেছে, দেখতে হয়
দেখা কিছু শেষ আছে তবে ?
এইখানে, এই বিবেকানন্দর স্ট্যাচু ঘুরিয়ে লাইন লাইন মরা মানুষের ভীড়
কাটা পরে গেছে কত নামহীন বাস্তুহারা ফুলগাছ
উদ্বাস্তু ভেবে তাদের নাম কেউ দিয়েছিল আগাছা,
ভালবেসে নয়।
আগাছার নাম কেউ ভালবেসে রাখেনি কখনো।
তাই তারা ভীড় করে, ফার্স্ট প্রাইজ ঝুড়ি ঝুড়ি শারদ সম্মান...
কে একজন বুড়ো করে
গাঁজাখোর পাগল ভিখিরী...
ভীড় ঠেলে বলেছিল
"দাদা, একটা পাস হবে?"
ট্রেসপাস করা সব বোবার মিছিলে সভ্যতা থমকে দাঁড়ালো!
চুল্লী সন্ধান
খুব বিব্রত বোধ করি
যখন আমারই শবের সামনে বসে স্তোক আর শোক
হাত ধরাধরি করে বানপ্রস্থে যায়
কেউ কবি, কেউ বা আত্মীয়
কেউ কেউ আরো বেশী আত্মকেন্দ্রিক
সবাই আর যা হোক আসলে দোকানী
তুলাদণ্ড নিয়ে মাপে নিক্তি ইমোশন
সন্ধ্যা নামে; শীতলা বুড়ির সেই অতলঘাটেতে
হাতে হাত ধরে থাকে ঈর্ষা ও প্রেম
আমি তুলসীতলার খাঁজে খাঁজে চোখ মেলে তাকিয়ে ছিলাম
খালি অদৃশ্য আড়াল কারণে
যা দেখেছি তাদেরকে লিখে যেতে পারিনি কখনো
সময়ের ডাউন ট্রেন চলে যায় লাশ নিয়ে চুল্লী সন্ধানে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন