Web ডুয়ার্স ১৩ - সৌমিত বসু -গুচ্ছ কবিতা
মায়া বৌ - ১১
একটা মানুষ আর একটা মানুষকে ডাকতে গিয়ে দেখে
দুজনের মাঝখান দিয়ে চলে যাচ্ছে এক তীব্র মালগাড়ী
এক একটি বগির ফাঁক দিয়ে সে দেখার চেষ্টা করে
কিন্তু ঝাপসা ছাড়া কিছুই দেখতে পায় না
তখন সে ফিরেও যেতে পারে না আবার
পাতের ওপর ঝাঁপিয়েও পড়তে পারে না
সে নিশ্চিত ট্রেন চলে গেলে তার জন্য পড়ে থাকবে শুধু হুইসেল
তখন সে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই আত্মহত্যা করে ।
মায়া বৌ - ১২
জলের নীচে ঘুমিয়ে আছো তুমি
প্রহর জোড়া ছন্দে বাজো ত্রিতাল
সোনার শরীর মাছের মতো কারো
সময় এসে আচমকা জাগালো ।
ঢেউয়ের ফাঁকে যত গোপন কথা
বুকের মাঝে মৃত্যুকালীন আলো
পথের ওপর দিলো উপুড় করে
জানলোনা কেউ কারা যে চমকালো ।
বুকের ভেতর ঘুমিয়ে আছো তুমি
রাত্রি তোমার ছোট মেয়ের নাম ।
মায়া বৌ - ১৯
ধুলোর ভেতর থাকি । সারাগায়ে পরাজয় ।
যদিও তোমার কথা এখন অতীত , তবু বাজে
ঘাসের ওপর রাখা কুয়াশার মতো টলটল
জীবনের ও প্রান্ত ধরে টান দেয় ডানাহীন পাখি
আর পালক ছাড়ানো রাত্রি ভোর হলে উড়ে এসে বসে ।
Bottle Art by Saptaparni Mandal Majumdar |
মায়া বৌ - ২০
সবুজ সবুজ একটানা ফিতেহীন বাতাস
ধরে আছি দুজন দুপ্রান্তে ।একটা ঢেউ
কোনোক্রমে একটা ঢেউ যদি আছড়ে পড়ে
হুতাশের গায়ে লেগে থাকা আলো তোমার-তোমার
মায়া বৌ- ৫৮
তোমারও কি প্রতিটি রাত নির্বান্ধব লাগে
চারদিকে হইচই আনন্দের গান
অথচ মেঝের ওপর তুমি নিজেকে আবিষ্কার করো
পাতাহীন গাছের মতন ।
উপুড় হারমোনিয়ামে কাটিয়ে দাও
এক একটি নিস্প্রদীপ রাত ।
তবে বুঝি , মৃত্যু একটি সমান্তরাল পরমায়ুর নাম ।
মায়া বৌ - ৬০
লক্ষ্মীর মতো পা । যদিও লক্ষ্মীর পা আমি দেখিনি কখনো।
সোনার বর্ণ হবে। তুলতুলে। সেই পা নিয়ে তুমি ঘুরে বেড়াও
পৃথিবীর অন্য কিনারে। আমার দৃষ্টি ততদূর পৌঁছুতে পারে না।
একদিন আলতা পরো । চোখের জল দিয়ে আমি
ধুয়ে দেবো চন্ডীদাস হয়ে।হাত বুলিয়ে মুছিয়ে দেবো সমস্ত অপমান।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন