Web ডুয়ার্স ১৩ - প্রমিশ প্রতিম পাঞ্জা - গুচ্ছকবিতা




আশা



আমার আশা দশদিগন্ত শব্দ পাতায়
বিকোয় স্বপ্ন অনুভবের মেঘলা খাতায়।
ঘোমটা রাতে গ্রহণ লাগে রেশন চালে।

আমার আশা দূর-পাহাড়ের স্লেজের গাড়ি
ন্যাংটো যুবক নীলে-সাদায় দিচ্ছে পাড়ি।
আমিষ গন্ধে উড়ছে শকুন হাসপাতালে।

আমার আশা বস্তিপাড়ার মরণ জ্বালা
শুকিয়ে গেছে ঋণের বোঝায় লুব্ধ লালা।
অর্ধমৃত চাঁদের আলো পূর্বরাগে।

আশা আমার মৌলবাদীর আগুন ঘরে
লাগামছাড়া ধর্ম খেলায় মানুষ মরে।
লোহিতশুন্য কোলের শিশু রাত্রি জাগে।

             


গড়জীবন



বৃষ্টিভাঙার শব্দগুলো কুড়িয়ে রাখি অপ্রকাশিত কবিতার অন্তমিলে।
তারপর গুছিয়ে রাখি জীবন বিমার সাম এসিওড়।
অসম্পূর্ণ কাব্যকথার পাশে রাখি বয়স্ক নিভ পেন।
ভয়কে হারিয়ে ফিরছে অবশিষ্ট বাক।

পুত্রবধূ দ্রুত মিলিয়েনিচ্ছেন পাশবইর ডেবিট ও ক্রেডিট।
নাতি নাতনিরা ঝাঁকিয়ে দিচ্ছে বিন্যস্ত বাহু।
পরিষ্কার শুনতে পাচ্ছি গ্লাসে গ্লুকোজ জলের প্রস্তুতি।

ঘী আর তুলো দিয়ে বাঁধা হচ্ছে আত্মকথা,
ঘুমের ভেতরে ঘুমিয়ে যাচ্ছে পঞ্চশক্তি।
কাঁধের উপরে পাহারা দিচ্ছে কাঁধ।

যেকোনো সময় কিশোর- তরুণের আগুনগল্পে, থেমেযেতে পারে টাইমকল।





নির্ভুল 


পাতা ছেড়ে দিয়ে গাছেরা যখন কাঁদে,
আমি ঘুলঘুলি দিয়ে  দেখি তাদের বসন্ত অশ্রু।
হলুদরঙেরা কতোখানি শুভ হলে,
তার গা গড়িয়ে নেমে  আসে নতুন।  পুরানোটাও একদিন ফসিল হয়ে যায়।
খনিজ তাকে অমোঘ বার্তা দিতে চায়
বার্তার প্রতিটা কণা  থাকে উঠে আসে সম্বল।
হিংসার পিঠ দেওয়ালে ঠেকলে,
সম্বলেরাই একদিন ঘুরিয়ে দেয় বন্দুকের নল।

ফল ও ফুলের পুষ্টি মালা পরে,
প্রটোন কণা গুলো ছুটে যেতে চায় সভ্যতার দিকে।









স্কেচপেন


গোপী কুঞ্জে আর কুঞ্জবন নেই,
তার পাসের জায়গাটাতে ও পি ডব্লিউ ডির লাল ফিতে বাঁধা।
এখানে আদর্শ মাপা হয় শবের ছায়া দেখে!

প্রশান্তের প্রথম স্টোক মাস ছয়েক আগে
তখন ধেয়ে আসছে শারদীয়া দুর্গাপূজা।
তিন মাসের ভাড়া বাকি প্যাথোলজি টার
ভাঙা ভাঙা দিন ও রাত্রি জাপ্টে আছে স্পন্দন,
মন বসে না পরিক্ষা নিরীক্ষায়।
কফ্,স্পার্ম ও রক্তে ভেসে যায় শ্রাবণকলা।
উলঙ্গ শরীর টাকে দিনে পাঞ্জাবি ও রাতে গামছা দিয়ে ঢেকে রাখে।
মৃতপ্রায় জানালার ওপার থেকে বয়ে আসে নেপালী লটারির কাউন্টিং।


ঝাপসা পেন্সিল এর আঁচড়ে আঁকা হয় ধর্মঘট,মহাবিশ্ব,মৌন মিছিল ও ইলেকট্রিক পোস্টের উচ্চতা।
লোডশেডিং এর অন্ধকার  নিয়ে রাজনৈতিক মতামত প্রকাশ করার চেষ্টা করেন কেউ কেউ!

উনবিংশ শতাব্দীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে হাজার ফুল ফুটে।
ফুলের সুগন্ধ ছাপিয়ে বয়ে আসে গাঢ়ো অ্যালকোহল,
এমনই বেতাল কথার ডাস্টবিনে পড়ে থাকে তার  জন্মপত্র।




নীলগ্রহ


চুপচাঁদ জেগে আছে ঘুমন্ত ঘুঙুরের দুই গালে।
চুল বেঁধে কত্থক নাচেনি তার যুবতী আঁচল
পাটভাঙা জরীপাড় কতটা বেতাল হলে, মজেওঠে আমার বহুতল?
না বুঝেই...
মুঠো মুঠো লজিক পেরিয়ে যায় রাতের প্লাটফর্ম।

জ্যামিতিক আকার নিয়ে যে ট্রেনটি ছুটে গেছে বিস্তীর্ণ স্টেশনের গা ঘেঁষে,
তার প্রচ্ছায়া পড়েও ছিল ছোট্ট নদীটার উপর।
নিবুনিবু আলোয় বহুবার মেপেছি মিসিসিপির ওই চণ্ডাল পরিধি।

কতোকাল বৃষ্টি হয়নি এমন উপত্যকায়!





সময় 


মাঝ রাতের দিকে ঠেলে দিয়ে অন্ধকার
পাশফিরে দেখি কেউ নেই কোথাও!
কেবল একটা পায়রা  তার ভাঙা ডানা নিয়ে খুঁটে খাচ্ছে লজ্জা।
অসম্ভব চিৎকার বুকে নিয়ে আকাশে উড়ে যাচ্ছে প্লেন।
এখানে কোনটা কার পথ ভাবার সময় নেই!

সুলভ মুল্যের দোকান ভাঙিয়ে দিচ্ছে ব্যক্তিগত।
অবহেলায় খুচরো হয়ে যায় দৃষ্টি।
কতো সহজেই স্বপ্নেরা দ্বিক বদলায়!
ঘাটতি মুল্যের বেদনা গুলো মুদ্রাস্ফীতি চায়।

তখনই আমি ছোট্ট টবে পুঁতে রাখি সবুজ সময়।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সংখ্যা ১৮ || বর্ষ ৫

ফেরার অধ্যায়: -২য় বর্ষ সংখ্যা ১৫

বিষয় - বই আলোচনা-সংখ্যা ১৬ বর্ষ ২