Web ডুয়ার্স ১৩/২ - অঙ্কিত দে - তরুণের গুচ্ছকবিতা







তরুণ কবিপরিচিতি :

"দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে, পিঠের বুক চওড়া হয়"- একদিন এই পরিস্থিতির থেকেই লেখা শুরু করেছিলাম। উচ্চমাধ্যমিক অবদি বিঞ্জান বিভাগের ছাত্র ছিলাম, বাংলা পড়তে পড়তে একটা সময় ইচ্ছে হলো বাংলা কবিতা লেখার, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত জীবনে এমন কোন কিছুই ঘটেনি যেটা আমাকে শব্দের সাথে দৃঢ় ভাবে ধরে রাখতে সাহায্য করবে। বাংলা সাহিত্য নিয়ে পড়লাম কোলকাতার আশুতোষ কলেজে।বয়স তখন ১৯। বাড়িতে কেউ জানতো না যে আমি লেখালেখি করি। উত্তরবঙ্গ সংবাদে ১৯ বছর বয়সে যখন প্রথম ছাপা অক্ষরে কবিতা প্রকাশিত হয়, তখন সাহস হয় এটা বলার যে কবিতা আমার নেশা।তারপর ২০১৯ সালে কোলকাতার বিভিন্ন ছোটপত্রিকায় কবিতা প্রকাশিত হয়েছে একইসাথে সুযোগ হয়েছে আন্তর্জাতিক পত্রিকায় লেখার। এছাড়াও লিখেছি আজকাল, উত্তরের সারাদিন ইত্যাদি সংবাদপত্রে লিখেছি। কোচবিহার থেকে প্রকাশিত মেঘের ভেলায় একাধিক লেখা বর্তমান। কবিতা লিখতে "পেন নেম" হিসেবে নিজের নাম সর্বদা "পাথর" লিখেছি, কারণ - আমি চাই, সমাজের গতানুগতিক পচাগলা চিন্তাধারা সমৃদ্ধ কাঁচের ইমারত গুলোকে পাথর দিয়ে ভাঙতে, প্রত্যেকটা পাথর মুখপাত্র হোক স্রেফ প্রতিবাদের।

মেঘ


ইদানীং লাইসেন্স ছাড়াই গুজব রটে মেঘে ;
দুঃসময়ে মানুষ আমার জন্য সাজিয়েছে কফিন,
কফিনে ঠুকেছে পেরেক
পেরেকে মেরেছে হাতুড়ি
হাতুড়ি লুকিয়েছে ফুলে
ফুলের আড়ালে আলপিন
আলপিনের নিভৃতেই বিস্তার পাচ্ছে
আমার বন্ধুভাগ‌্য।


স্বপ্ন

চোখ খুলে রাখতে ভীষণ ভয় হয় আজকাল,
আমি চাইনা আমার জন্য কোন স্বপ্নের খুন হোক।


গিরিখাত


দুটো নদী একে অপরের থেকে বহুদিন মুখ ফিরিয়ে থাকলে, তাদের বুকে গভীর গিরিখাত তৈরী হয়।

বিশের অসুখ


১.

শূন্য জনপদ, ক্ষিদের গন্ধ ছুটে আসছে চারিদিক থেকে।শহরের সব বাতি নিভে গেলে মানুষ ও পশুকে যেন মনে হয় একই মায়ের দুই সন্তান।

আদতে, নিঃসঙ্গতা প্রত্যেক জীবের অন্তিম বন্ধু।

২.
হাসপাতালের বেডে মেলার মতন ভিড়,
ডাক্তারের হাতে কাঁচি,ছুরি প্রভৃতি স্টিলের যন্ত্রপাতি লাল রং দেখে মনখারাপ করছে অনবরত।

অথচ একটা মানুষের জীবনচক্র এই লাল রঙের মধ্য দিয়েই শুরু,শেষ।

 বৃদ্ধাশ্রম

বয়স হয়েছে ;
মাথায় কোঁকড়ানো সাদা চুল,
চামড়া কুঁচকে গিয়েছে
কচুরিপানার মতো ।
এ শরীর বিস্তীর্ণ এয়ারপোর্ট,
নিকটবর্তী সর্বনাম
বিলেতে বিলুপ্তপ্রায় ।
বয়স হয়েছে ;
নিঃসঙ্গ হয়ে চারিদিকে তাকিয়ে দেখি,
আরো বৃদ্ধ গাছ খুঁজে পাই ।
খোকা বলেছিলো বাড়ি নিয়ে যাবে আমায়,
সেই অপেক্ষায় বছর পেরিয়ে গেছে,
আমার শুধু বয়স বেড়েছে..

 ফিরে দেখা শিলিগুড়ি

পুরোনো শহরে ফিরে গেলে মনে হয় আদতে পুরোনো বলে কিছু আর নেই ;
রাস্তা-ঘাট ঘুরে, জনসমাগমের থেকে একাকী পা বাড়িয়ে নির্জনতায় দুঃখ কিনি,
দুঃখে নয়।

দুঃখ কাছে এসে বসে,শোয়
চোখের সাথে জলের গোপন রহস্য
আমায় সংক্ষিপ্ত পড়ে শোনায়,
আমি শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ি ।

কিছু সময় অতিবাহিত হওয়ার পর..
দরজা কেউ ঠকঠক করে, দায়িত্বসহিত
বলতে আসে,
তাড়াতাড়ি খেতে এসো, খাওয়ার টা ঠান্ডা হলো যে ;

আজকের ইঁদুর দৌড় এটুকুই ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সংখ্যা ১৮ || বর্ষ ৫

ফেরার অধ্যায়: -২য় বর্ষ সংখ্যা ১৫

বিষয় - বই আলোচনা-সংখ্যা ১৬ বর্ষ ২