Web ডুয়ার্স ১৩/২ - মলয় পাহাড়ি - গুচ্ছকবিতা







অশৌচের বেশ

গুরু নিপাতের পর এসে দাঁড়িয়েছি
পাশে, হবিস্যি রান্নার বিদুর অন্ন,
কাঠি ভেঙে এনে উনুনের অদূরে বসেছি

গলা নামিয়ে পুরোনো গল্পের মতো বয়ে
যেতে দিয়েছি শোক। অপরাধী চোখ বশ
মেনেছে ততদিনে।

এভাবে। আমি তোমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছি।
মুখে কাঁচা পাকা দাড়ি,খালি গা,খেটো ধুতিতে
কম্বলের আসন গোঁজা।
আমি তোমাকে চির অশৌচের বেশে দেখতে চেয়েছি।

ফ্যান ক্লাবে লগ্নি করেছি

অক্ষরের প্রাসাদ উঠে আসে হাতে।সেই
প্রাসাদের তলে তরুণ তরুণীরা ভিড় করে।
সভা হয়। সম্মোহন প্রয়োগ করি।

নিজের নামের ফ্যান ক্লাবে লগ্নি করেছি। কাঁচের বাক্সের ভিতর মাছেদের ছোটাছুটি। রঙিন ।

বাড়িতে কুর্তা পাঞ্জাবি পরতে হয় এখন।
 বোতামের কিস্তি ।আমি ব্যাস্ত মামনি।

তোমরা বাঁচলে বাঁচো,মরলে মরো। বাবাকে সময়ে ওষুধ দিও। বাবাকে দেখো। হে, সোনার ডিম পাড়া হাঁস, শুভ জন্মদিন।

সকাল থেকে জ্বর

স্যান্ডো গেঞ্জির তলায় জ্বর।

অপরাধ করে ফিরে গেছে কাজরী নদীর হাওয়া।
ধকলের চিহ্ন ধুয়ে,পাথরের টিলার উপর সকাল হয়েছে।

মেয়েরা স্মিত চুম্বন শেষে, যে যার ঘরে ফিরে গেল।

সকাল থেকে জ্বর। যেভাবে
অপরাধের পর প্রতিটি ধর্ষকের দেহে জ্বর আসে

দিঘির পাড়ে কোঠাবাড়ি

একটা ছবির সাথে দ্বন্দ্ব করি।

বকফুলের গাছ দিঘির পাড়ে। কোঠাবাড়ি থেকে
দূর ঈশানে নিমের পাতা মাড়াইয়ের কল বসেছে।

রক্তাভ কাঠের সার অংশ কেটে নির্মিত হচ্ছে খাট।
এ খাট চলে যাবে মন্দিরে, শোয়ার ঘরে, শ্মশান ঘাটে

 একটা নিমের বীজ রোপন করে বারো দিন তাকিয়ে থাকতে পারো যদি, তোমার ক্ষয় নেই

সাধন

রাজবাড়ির পা ধোয়া জল নদীতে এসে পড়ে।

নদীর তীরে মন্দির।
রাজার পা অনুসরণ করে ভক্তরা উঠে দাঁড়ায়।
রাজার কপালের টিকা জনতার কপালে উঠে আসে।

এরপর লাঙ্গল মাঠে নামলে
আকাশের রোদ লাগে গায়ে। দেবতার সাথে
কতো কথা হয় সরাসরি। যুবতী কৃষাণী ওঁদের শিরিসের ছায়ায় নিয়ে বসায়।জল ঢেলে দেয় আঁজলায়। বুক ভিজিয়ে গায় বর্ষার গান।

এই আসর থেকে কোনো যুবক উঠে আসে।তার হাতে বট পাতার বাঁশি। সে বাজায় আর সারা গাঁ  চষা জমির মাটির ধুলো মাথায় তোলে

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সংখ্যা ১৮ || বর্ষ ৫

ফেরার অধ্যায়: -২য় বর্ষ সংখ্যা ১৫

বিষয় - বই আলোচনা-সংখ্যা ১৬ বর্ষ ২