Web ডুয়ার্স ১৩/২ - অয়ন মন্ডল - গুচ্ছকবিতা





অসময়ের কবিতা



                                 (১)


আগের রাতের কথাগুলির মাঝেই
খুশির পাহাড় মিশে আছে (আগুনেই/ সমস্ত আগের শব)
পালকের উদাসীনতা পাখির আগে

মন পুড়ে মৃতগাছ হয়েছে শরীর...

প্রতিটি নদীর বাঁকে আবেগ ঢেউয়ে
জালের শরীর রাখে বিছিয়ে নাবিক...

প্রভু, ক্ষমাহীন প্রেমের নৌবিহার শিখিয়ে দাও
কমলারঙের মৃত্যু দাসত্ব বোঝে না



                                   (২)


তোমার কাছে যেতে চাই
কাঠের আগুনের হাঁ-মুখ বিস্ময়
টিনের চালের বেড়া
লাউমাচায় ঘেরা বালিকাবেলা

নাভির পাশে সুখদুঃখের গল্প
স্বপ্নের আকাল মহামারী

ঘোষণা শেষের বাতিল ট্রেন
তোমার কাছে যেতে চাই !

আগুনও কী আলো?
পুড়তে পুড়তে এগোয় আয়ু
আশু তোমার নয়ন
শব্দহীন সংসার


                                     (৩)


দীর্ঘদিন ফুরফুরে হাওয়ার মতো
মৃত্যুর কদর বেড়ে যাচ্ছে...
মৃত্তিকারঙের শরীরে লেপ্টে আছে
ভালবাসার আঁতুরঘর
৯ই সেপ্টেম্বর তুমি-আমি অন্তরালে
তিন ঢোক গিলেছিলাম ন্যাংটো শরীরে

তারপর,কতরাত
জোনাকির মতো কেঁদেছি
লাউডগা সাপের সজীবতা ধার নিয়েছিল
তোমার শরীর-কাছের সমস্ত অনাদর

শরীক হয়েছিল আমার দেহের

                                      (৪)


তুমি ঈশ্বরীয় চোখে আমার দিকে তাকিয়ে
আশাবাদী আমি আদম-ইভের গল্প
অভ্র কীবোর্ড,তীব্র স্বাধীনতার কথা বলে
বলো
বলো
বলো
ভালবাসা নিয়ে তোমার নতুন পরিকল্পনা
নতুন ভারতের বকুলকথা তুমি কী লিখতে পারবে?

লাভের দ্বিগুণ ক্ষতি সারাতে
তুমি দেবী হয়ে ওঠো,হে প্রেমিকা !
মানুষের চোখ দিয়ে আমি তোমাকে ঠিক
চিনতে পারছি না...


                                      (৫)


নতুন গাভীস্তনের মতো তোমার বাঁটে সদ্য দুধ এসেছে
কথা রাখোনি তুমি !
ভাঙা গিটার কোলে বিকাল গড়ায়
আমার কালো চামড়ায় বিঁধে আছে
অপমানের আঁধুলি-আধুনিক

গাভীর চোখের শুকানো জলের সাথে কত
নদী মরে যায় আপন খেয়ালে...ডিসেম্বর প্রিয়
তোমার আধফোটা পদ্মযোনি

কথা রাখোনি তুমি
ফর্সা চামড়ার বাজিমাত
সব কবির ভাগ্যে জোটে না

                                     (৬)


মিথ্যাবাদীর চতুর ফোনায় গ্রীষ্মের দুপুর পাকাআমের রং নিয়েছে...সেয়ানা মেয়েদের ভুরু ভীরু প্রেমিকদের রোমাঞ্চকর আত্মগোপন

মনে-মনেই
বামহাত প্রিয় সৌরভ গাঙ্গুলী হতে চাই
ডানহাতে কবিতা লিখি
অবগুণ্ঠনে বেজে চলে সানাই

সাদা ক্যানভাস
খুব ধীরে হেঁটে আসে নিমতেতো অন্ধকার
অন্তরায় দাঁড়িয়ে জড়ুল মন

ক্রমজায়মান একটি আকাশ আমার ব্যর্থতা ঢেকে দেয়


                                      (৭)


মানুষের বেদনার মতো তীব্র গর্জনে মেতে,মৃত্যু
সমানে চুল উঠে যাচ্ছে মাথার
হৃদয় কেবল বটবৃক্ষের ছায়ায় কেঁপে ওঠে
মৃত্যু নিয়ে আর একটাও কবিতা নয়,শ্রদ্ধা
আমাদের ব্রেকআপের সপ্তম সন্ধ্যায়
তুলসী মঞ্চ আলোকিত করো তুমি

বহু আলোচনার পর থেমে যাবে আমাদের পথ
কিন্তু দিয়ে জোড়া যাবে না বিস্ময়
বিশ্বাস এখন বিড়ালের এঁটো

ভয় হয়
মরতে তো হবেই
তোমার নাগরের শ্মশানবন্ধু
আমার মাথা ফাটিয়ে দেবে মৃত্যুর পর

                                     (৮)


এখানে এক আশ্চর্য ঋতু চলছে
কেউ ভাবেইনি
এই ভয়ংকর সময়ে তুমি আমাকে ছেড়ে যেতে পারো
ভীষণ একা রেললাইনের মতো জীবন
এক পা, দু পা, এক যাযাবর ফাটলের দিকে এগোচ্ছে মৃত্যু
সিলভার কাপের মতো চকচক করছে
পরিযায়ী পরিখার পরিবার...
মানচিত্র এঁকে কী বোঝাবো?
আমাদের ভুলে ভরা আকাশে
পাখিদের ঠাঁই নেই...


                                  (৯)


একা পেয়ে কে তোমাকে কাঁদায়?
স্বপ্নের ভিতর হামাগুড়ি দিচ্ছে রোম সাম্রাজ্য
জলের সাক্ষী অপচয় মরা মাছের দোসর

ব্রিজের উপর প্রেমিকের ভাঙা হাঁটু
মিথ্যা শপথে কী লাভ?
বেলা বেড়ে যায় মরা পাতার নিঝুম স্টেশনে

একা পেয়ে কে তোমাকে কাঁদায়?

দেখতে চাই,
ঘুমোলে সুন্দর লাগে
নাকি মৃত্যুর পর...




মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সংখ্যা ১৮ || বর্ষ ৫

ফেরার অধ্যায়: -২য় বর্ষ সংখ্যা ১৫

বিষয় - বই আলোচনা-সংখ্যা ১৬ বর্ষ ২