Web ডুয়ার্স ১৩/২ - উজ্জ্বল বর্মন -তরুণ এর গুচ্ছকবিতা





তরুণ কবি পরিচিতি  :- 

গ্রাম হাতিয়াডাঙ্গা,শিলিগুড়ি শহর।বর্তমানে কলেজে বাংলা অনার্সের ২য় বর্ষের ছাত্র।২০১৮উওরবঙ্গ সংবাদ পত্রিকা থেকেই আত্মপ্রকাশ।নিয়মিত বেশ কয়েকটি পত্রিকা লেখালেখি করছি।লেখালেখির পাশে বই পড়তে খুব ভালোবাসি আর সাথে রান করি।

 বিরহ

মৃত পাথরের দিকে তাকিয়ে থাকি,
নিঃস্ব কঙ্কাল দেখি।
জ্বলন্ত চোখ দেখি।
মায়াবী প্রেমিকাকে দেখি।
নিজেকেই প্রশ্ন করে উঠি?
বিরহটা কার?
ক্ষয়িষ্ণু পাথরের বা জীবাশ্মের!
নাকি গোলাপের কাঁটার!
নাকি রাত জাগা জোনাকির!

বিরহের কখনও নাম দেইনি,
কবিতার সাথে কখনও আমার বিরহ ঘটেনি।
বহুদিন যাবৎ একটা প্রেম বুকের পাজরে জন্ম নিয়েছিল,হয়তো...
তবে তোমার সাথে বিরহটা খুঁজতে গিয়েই,
চোখে বন্যা ডেকে আনি।

বিরহটা বহুদিনের,
চোখের জলের সাথে সাদা ভাতের...।


অনুজীব

আমি কিন্তু কখনোই তুমি নই,
অবশ‍্য তুমি যা ভাবছো আমি সেটাও নই...
আমি কোনো ব্রহ্মপুত্র,কোনো প্রাচীন জীবাশ্ম,মরুভূমির ধূলিকণার মিশ্রণও নই...।
আমি আদতেই অনুজীব,
আমি বইয়ের ভেতর মুখ গুজে থাকা 'মই।

চক্রান্ত

সৈন‍্য এক-পা দু-পা করে এগোতে এগোতে
মৃত‍্যুকে ডেকে আনে।
ঘোড়ার প্রচন্ড বেগে ছুটন্ত শরীরও বিফল।
শূড় দিয়ে নাড়া দিতে দিতেই,
আরও এক সৈন‍্যর মৃত্যু ঘটে।
নৌকো বেঁচেবর্তে সোজাসাপ্টা হাঁটতে গিয়েই,
মন্ত্রী মায়ার জালে আবদ্ধ হয়ে যায়।
তারপর বিকলাঙ্গ রাজা তিলে তিলে মৃত‍্যুকে বরণ করে।

হাতগুলো কান্না করছে সঙ্গোপনে


থাল নিয়ে বসে আছি সকলে
মা ভাত বেড়ে দিচ্ছে এক হাতা দু হাতা করে,
সাথে মুখ না ফোটানো জলও বেড়ে দিচ্ছে।

সেদিন মাকে ভাত খেতে দেখেছিলাম,
প্রতিদিন যেমনটা দেখি তেমনটা নয়।
হাতগুলো কান্না করছে সঙ্গোপনে
পেটও টানছে ভাতের গন্ধে,
মা তবুও খেতে পারছেনা।

মাকে সেদিন সিমেন্টে গিলেছে...

উপসংহার

তোমার আমার রোদ্দুর বিস্তর ফারাক।
কবিতায় মুক্তি খুঁজি মুক্তি
পাখির বুকের গহ্বরে প্রবেশ করলেই বুঝতে পারি,
প্রেম আসলে নির্মম একটা হত‍্যা।
শব্দের বিশাল ভান্ডার নিয়ে ঘুরছি রোজ,
ক্ষুদ্র একটা শব্দ পাজরে জোরালো আঘাত হেনে চলেছে-
নদীকে দেখছি জন্মের আগে থেকেই বিস্তির্ণ  পথ হেঁটে চলেছে...
অথচ নদীর মুখে কখনও 'বিচ্ছেদ' শব্দটা শুনতে পাইনা...।

দেহের গহ্বরে জমতে থাকা কাঁকড়ার দল ক্ষত করতে করতে,
অজস্র প্রশ্নের ভিড়ে দাঁড়িয়ে আছি।
আমার ফাটল ধরা মেঘে যন্ত্রণার কারখানা তৈরী করেছি।
চোখে অনেক বিষাদ লুকিয়ে রেখেছি।
যেই সম্পর্ক ছিড়ে যাওয়ার নয়,
সেই সম্পর্ক সুই সুতো দিয়ে সেলাই করতে বসেছি।

জানি পৃথিবীতে কেউ থেকে যেতে আসেনা,
বিচ্ছেদ ঘটাতে আসে...
আসলে উপসংহারই মায়ার বিশ্লেষণ।




মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সংখ্যা ১৮ || বর্ষ ৫

ফেরার অধ্যায়: -২য় বর্ষ সংখ্যা ১৫

বিষয় - বই আলোচনা-সংখ্যা ১৬ বর্ষ ২